তাহিরপুরে মডেল মসজিদ নির্মাণ ১৮ মাসের কাজ হয়নি ৫ বছরেও
- আপলোড সময় : ১১-১২-২০২৪ ১০:০০:৫৩ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ১১-১২-২০২৪ ১০:০০:৫৩ পূর্বাহ্ন
জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়া ::
তাহিরপুর উপজেলা সদরে মডেল মসজিদ নির্মাণকাজটি ১৮ মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশনা থাকলেও গত ৫ বছরেও শেষ হয়নি। এদিকে ঠিকাদাররা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ না করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এনিয়ে সর্বমহলে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
নির্মাণাধীন সদর উপজেলা মডেল মসজিদের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, এখনো মসজিদের বিভিন্ন অংশে ইটের গাথুনি, আস্তর করা, টাইলস বসানো থেকে শুরু করে দরজা লাগানো, রং করা, বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাসহ অনেক কাজ বাকি রয়েছে। এছাড়া ইসলামি সাংস্কৃতিক চর্চা কেন্দ্রের অধিকাংশ জিনিসপত্র এখনো আনা হয়নি।
জেলা গণপূর্ত বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জেলার ১২টি উপজেলায় ১২টি ও জেলা সদরে ১টি মোট ১৩টি মডেল মসজিদ ১৮৫ কোটি টাকায় ব্যয়ে কাজ শুরু হয়। প্রতিটি মসজিদে ইসলামিক ট্রেনিং ও অটিজম সেন্টার, পুরুষ ও মহিলাদের জন্য আলাদা নামাজের জায়গা, কনফারেন্স ও গেস্ট রুমসহ ফুলের বাগান থাকার কথা রয়েছে।
এই বিষয়ে তাহিরপুর উপজেলা সদরে নির্মাণাধীন মডেল মসজিদের দায়িত্বে থাকা বিশ্বাস বিল্ডার্সের প্রকৌশলী এমডি আলম মিয়া জানান, ১১ কোটি ৭৯ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন মডেল মসজিদটি ০৩/০৪/২০১৯ইং তারিখে কাজ শুরু করে ১৮ মাসের মধ্যে নির্মাণ করার কথা ছিল। এর মধ্যে জায়গা নির্ধারণ, মসজিদ ভাঙা, পুকুর ভরাট, করোনা, বন্যা, ফান্ডের সমস্যাসহ নানান জটিলতায় কাজ শুরু হয় ২০২০ সালে। এ পর্যন্ত ৬৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে দাবি করে তিনি জানান, গণপূর্ত অধিদফতর থেকে একাধিক বার রিটেন্ডার করতে চাইলে আমরা যেহেতু কাজটি করেছি তাই শেষটা আমরাই করতে চাই। তাই হাইকোর্টে আপিল করি। পরে আদালত চলতি বছর অক্টোবর মাসে হাইকোর্ট থেকে সময় বাড়ানো হয়েছে ৬ মাসের। যা শেষ হবে মার্চ বা এপ্রিল মাসে। আগামী বছরের মার্চ বা এপ্রিল মাসের মধ্যে স¤পূর্ণ কাজ শেষ করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন সুনামগঞ্জের উপ-পরিচালক মোশারফ হোসেন জানান, নির্ধারিত সময়ে মডেল মসজিদের কাজ শেষ না হওয়ায় আমরা সরকারের ওপর মহলকে একাধিকবার লিখিতভাবে জানিয়েছিলাম। কিন্তু কোন কাজ হয়নি। দায়িত্বপ্রাপ্তরা জানিয়েছিলের ঘন ঘন নির্মাণসামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধির ফলে ঠিকাদাররা কাজ শেষ করতে পারছেনা। তারাও ঠিকাদার পরিবর্তন করতে চাইলেও হয়নি। আর কাজও শেষ হয়নি। আমাদের পক্ষ থেকে দ্রুত শেষ করার দাবি জানাই।
জামায়াতে ইসলামী তাহিরপুর শাখার আমির রোকন উদ্দিন বলেন, আমাদের তাহিরপুরে মডেল মসজিদের কাজ আরো আগেই শেষ করার কথা ছিল কিন্তু হয়নি। দ্রুত কাজ শেষ করে মুসল্লিদের নামাজের উপযোগী করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে গণপূর্ত অধিদপ্তর তাহিরপুর উপজেলার নির্বাহী প্রকৌশলী জুয়েল রানা জানান, মডেল মসজিদ (চুক্তি মূল্য ১১ কোটি ৭৯ লক্ষ টাকা ব্যয়ে) নির্মাণে কাজের গতি কম থাকায় দ্রুত নির্মাণের জন্য কয়েকবার তাদের চিঠি দিয়ে সতর্ক করা হয়েছিল। এরপর তাদের কাজের গতির কোনো পরিবর্তন না হওয়ায় তাদের কাজ বাতিল করার জন্য ঢাকা অফিসে লিখিতভাবে জানানো হয়েছিল। এরপর পর ঢাকা অফিস থেকে রিটেন্ডার করতে চাইলে বিশ্বাস বিল্ডার্সের দায়িত্বশীলগণ হাইকোর্টে একটি আবেদন করে। আদালত এই বিষয়ে আদেশের জন্য ৬ মাসের জন্য স্থগিত করেছে। এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল হাসেম জানান, মডেল মসজিদ দ্রুত নির্মাণের জন্য বিশ্বাস বিল্ডার্সের প্রকৌশলী ও গণপূর্ত বিভাগের দায়িত্বশীলদের সাথে কথা বলেছি। তারা যেন দ্রুত কাজ শেষ করে মসল্লীদের জন্য মসজিদটি উন্মুক্ত করে দেয়।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ